চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক নেন পাহাড়ের ৬০ শতাংশ বাসিন্দা/চট্টগ্রাম: চিকিৎসকের সঙ্গে কথা না বলেই অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করেন পাহাড়ে বসবাসকারী ৬০ শতাংশ জনগোষ্ঠী। শুধু তাই নয়, সামান্য জ্বর সর্দি-কাশির জন্য অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের প্রবণতা বেশি তাদের মধ্যে।সম্প্রতি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের যৌথ গবেষণায় উঠে এসেছে এমন তথ্য। ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নাল ‘বিএমজে ওপেন’ নামে একটি জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় দেখা যায়, ৭০ শতাংশ পাহাড়ে বসবাসকারী মানুষ জ্বর সর্দি-কাশিতে অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করছেন।
সবচেয়ে উদ্বেগজনক হলো, ভুল অ্যান্টিবায়োটিক খাচ্ছেন প্রায় ২০ শতাংশ মানুষ। মাথাব্যথা, হাত ও পা ব্যথার মতো বিভিন্ন উপসর্গেও খাচ্ছেন অ্যান্টিবায়োটিক।
পার্বত্য চট্টগ্রামের ১ হাজার ৩৩৬ জন আদিবাসীর মধ্যে পরিচালিত এই গবেষণায় আরও দেখা যায়, ৬০ শতাংশ লোকই জানেন না অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের কারণে ‘অ্যান্টিবায়োটিক অকার্যকারিতা’ হতে পারে। তাছাড়া ২৪ শতাংশ আদিবাসী স্বাস্থ্যকেন্দ্র দূরে হওয়ার কারণে চিকিৎসকের কাছে যায় না। আবার ২৯ শতাংশ মানুষ ব্যয় নির্বাহ করার সামর্থ্য নেই দেখে চিকিৎসকের কাছে যান না।
৫৫ শতাংশ মানুষ জানেন না অ্যান্টিবায়োটিক ঠিক কি কারণে খেতে হয়। ২১-৩৫ বছর বয়সী তরুণদের চিকিৎসকের সাথে কথা না বলে ওষুধ সেবনের প্রবণতা বেশি। সর্বাধিক ২১ শতাংশ পার্বত্যবাসী এজিথ্রোমাইসিন ও ১৯ শতাংশ এমোক্সিসিলিন সেবন করছেন চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই। ৬০ শতাংশ লোকেরই অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের প্রতিক্রিয়া ও অ্যান্টিবায়োটিক অকার্যকারিতা নিয়ে কোনো ধারণা নেই।
গবেষক দলে ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নাইম উদ্দিন হাসান চৌধুরী (অর্থনীতি) ও তানভীর এহসান ফাহিম (ফার্মেসি), রাঙ্গামাটি মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষক ডা. গৌরব দেওয়ান, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের ডা. মাসুদ রানা, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের ডা. এইচ এম হামিদুল্লাহ মেহেদী, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের অধ্যাপক নাজমুল আলম ও অয়ন সাহা, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আমজাদ হোসেন ও ইউএসটিসির জান্নাতুন উনাইজা। গবেষণা সহযোগী ছিল কল্যাণ চাকমা।
cbntoday/12April/ZI/ctg