দেশের সব নাগরিককে পেনশন সুবিধার আওতায় আনতে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের বিধিমালা ঘোষণা করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।রোববার এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ।চার ভাগে বিভক্ত পেনশন স্কিমে প্রবাসীদের জন্য ‘প্রবাস স্কিম’; বেসরকারি চাকরিজীবীদের জন্য ‘প্রগতি স্কিম’; কৃষক, কামার, জেলেসহ অনানুষ্ঠানিক খাতের ব্যক্তিদের জন্য ‘সুরক্ষা স্কিম’ এবং দরিদ্র ও স্বকর্মে নিয়োজিতদের জন্য ‘সমতা স্কিম’ রয়েছে।সমতা স্কিমে মাসিক কিস্তির এক হাজার টাকার মধ্যে ৫০০ টাকা দেবে সরকার।প্রবাস স্কিমে মাসিক পাঁচ হাজার, সাড়ে সাত হাজার ও ১০ হাজার টাকা হারে চাঁদা দেয়া যাবে।
প্রগতি স্কিমে মাসিক দুই হাজার, তিন হাজার ও পাঁচ হাজার টাকা হারে চাঁদা দেয়া যাবে।সুরক্ষা স্কিমে মাসিক এক হাজার, দুই হাজার, তিন হাজার ও পাঁচ হাজার টাকা হারে চাঁদা দেয়া যাবে।
অনলাইন ব্যাংকিং, ক্রেডিট ও ডেভিড কার্ডে বা ব্যাংকের শাখার মাধ্যমে কিস্তির টাকা জমা দিতে পারবে ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী নাগরিকরা।ন্যূনতম ১০ বছর কিস্তির টাকা জমা দিতে হবে এবং ৬০ বছর বয়স থেকে জমা দেয়া টাকার ৩৪ গুণ মাসে মাসে পেনশন পাওয়া যাবে। তবে টানা ৩ মাস কিস্তির টাকা জমা না দিলে পেনশন হিসাবটি স্থগিত হবে। জমা টাকার ওপর ৫০ শতাংশ ঋণ নিতে পারবেন পরিবারের সদস্যরা।
পেনশন স্কিমে অংশ নিতে বাংলাদেশি নাগরিকদের অনলাইনে নিবন্ধন করতে হবে। প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকরাও এই স্কিমে অংশ নিতে পারবেন। যেসব প্রবাসী বাংলাদেশির জাতীয় পরিচয়পত্র নেই, তারা পাসপোর্ট দিয়ে পেনশন স্কিমে নিবন্ধনের আবেদন করতে পারবেন।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ১৭ অগাস্ট সর্বজনীন পেনশন স্কিম কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন বলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
গত ২৪ জানুয়ারি ‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা বিল’ সংসদে পাস হয়। গত ১ জুন বাজেট পেশ করার সময় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল চলতি অর্থ বছরের শুরুতেই পেনশন সুবিধা বাস্তবায়ন করার কথা বলেছিলেন।বর্তমানে দেশে শুধু সরকারি কর্মচারীরা পেনশন পেলেও বেসরকারি চাকরিজীবীসহ সবাইকে পেনশনের আওতায় আনার প্রতিশ্রুতি ছিলো আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে। সরকার গঠনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবার জন্য এ সুবিধা চালু করার কথাও বলেন। এরপর এলক্ষ্যে আইন প্রণয়নের প্রক্রিয়া শুরু হয়।
সমতা স্কিমে টানা ১০ বছর কিস্তির টাকা জমা দিলে প্রতি মাসে এক হাজার টাকা ৫৩০ টাকা করে মাসিক পেনশন পাবে।
প্রগতি স্কিমে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কর্মচারীদের জন্য স্কিমে অংশ নেয়া যাবে। সেক্ষেত্রে স্কিমের চাঁদার অর্ধেক দেবে কর্মচারী। বাকি অর্ধেক টাকা প্রতিষ্ঠান দেবে। কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠান প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এই স্কিমে অংশ না নিলে কর্মচারী ব্যক্তিগতভাবে অংশ নিতে পারবেন।যেকোনো স্কিমের চাঁদার কিস্তি মাসিক, ত্রৈমাসিক বা বার্ষিক ভিত্তিতে পরিশোধ করা যাবে।
সিবিএনটুডে /১৪আগস্ট/জই/ঢাকা