Coxs Bazar News Today
ঢাকাবুধবার , ৭ জুন ২০২৩
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি
  3. আন্তর্জাতিক
  4. কক্সবাজার
  5. খেলাধুলা
  6. গ্রিস
  7. চট্টগ্রাম
  8. জলবায়ু
  9. জাতীয়
  10. তথ্যপ্রযুক্তি
  11. ধর্মীয়
  12. প্রবাস
  13. বিনোদন
  14. যুক্তরাষ্ট্র
  15. রাজনীতি

প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার পর এবার আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’ ও ‘তেজ’

কবির আহমেদ, জলবায়ু
জুন ৭, ২০২৩ ৬:৫৩ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার পর এবার আসছে ঘূর্ণিঝড়
‘বিপর্যয়’ ও ‘তেজ’ ।ঘূর্ণিঝড় মোখার পর এবার আসতে যাচ্ছে আরও দুই ঘূর্ণিঝড় বঙ্গোপসাগরে ‘বিপর্যয়’ ও আরব সাগরে ‘তেজ’। বিপর্যয় বাংলাদেশের এবং তেজ ভারতের দেয়া নাম।
কিছুদিন আগেই বাংলাদেশের উপকূলবর্তী এলাকায় প্রভাব ফেলেছিল ঘূর্ণিঝড় মোখা। কক্সবাজার সহ একাধিক এলাকায় এর প্রভাব পড়ে। এবার নতুন করে বাংলাদেশে তাণ্ডব চালাবে ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’? জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ে তা ওপার বাংলার উপকূলবর্তী এলাকায় আছড়ে পড়তে পারে, এমনটাই মনে করছেন আবহাওয়াবিদদের একাংশ।

গত বুধবার এই প্রসঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন
বাংলাদেশের আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ মোস্তাফা কামাল পলাশ। যদিও ওপার বাংলার আবহাওয়া দফতরের তরফে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, এখনও পর্যন্ত বিপর্যয় সাইক্লোন তৈরি হওয়া বা আছড়ে পড়া নিয়ে তাঁদের কাছে কোনও আপডেট নেই।

মুস্তাফা কামাল পলাশ বলেন, “জুনের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশের উপকূলবর্তী এলাকাতে আছড়ে পড়তে পারে এই ঘূর্ণিঝড়।” ইউরোপীয়ান আবহাওয়া পূর্বাভাসের খবর সামনে রেখে তিনি দাবি করেছেন, ৬ থেকে ৮ জুনের মধ্যে বঙ্গোপসাগরের উপর তৈরি হবে ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয় এবং তা ৯ থেকে ১০ জুনের মধ্যে বরিশাল বিভাগে আছড়ে পড়তে পারে।

তিনি আরও বলেন, “আমরা এই সাইক্লোনের বিষয়ে এখনও কোনও নির্দিষ্ট তথ্য পায়নি। কোনও সাইক্লোন হওয়ার পাঁচ থেকে দশ দিন আগে আমরা সাধারণত পূর্বাভাস দিয়ে থাকি।” অর্থাৎ আদৌ বাংলাদেশের উপর নতুন কোনও বিপর্যয় নেমে আসছে কিনা তা স্পষ্ট নয়।

এদিকে আরব সাগরে একই সময়ে আরও একটি প্রবল ঘূর্ণিঝড় তৈরি হচ্ছে। ক্রম অনুসারে এর নামকরণ করা হয়েছে ঘূর্ণিঝড় ‘তেজ’। অবশ্য যদি এই ঘূর্ণিঝড় দুইটির একটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত না হয়,তাহলে নামের পরিবর্তন হতে পারে। আবহাওয়াবিদদের মতে ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়ের পূর্বে ঘূর্ণিঝড় তেজ দ্রুত গভীর নিম্নচাপে পরিণত হতে যাচ্ছে। ভারতের আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, এটি তৈরি হলে আছড়ে পড়ার সময় বিধ্বংসী আকার ধারণ করতে পারে।

ভারতের আবহাওয়া অফিসের সূত্রে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে,আরব সাগরে আগামী ৮ জুন থেকে ১০ জুনের মধ্যে ঘূর্ণিঝড় ‘তেজ’ তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অনুমান করা হচ্ছে, ৫ থেকে ৭ জুনের মধ্যে একটি নিম্নচাপে তৈরি হবে আরব সাগরে। যা ভারতে কেরালা রাজ্যের উপকূলবর্তী এলাকায় নিম্নচাপ থেকে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। এরপর উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে এগোতে পারে সেটি। পরবর্তীতে তা শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হলে তার নাম হবে ‘তেজ’।

ভারতের আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হবে। তারপর আরব সাগরের এই ঘূর্ণাবর্ত ধীরে ধীরে গভীর থেকে গভীরতম নিম্নচাপে পরিণত হবে। শুরু হবে প্রবল বৃষ্টিপাত। খবরে আরও বলা হয়েছে, এই ঘূর্ণাবর্ত উত্তরদিকে অগ্রসর হতে পারে। সেক্ষেত্রে পশ্চিমঘাটে প্রবল বৃষ্টিপাত হতে পারে। ভাসতে পারে কেরালা।

ভারতের দক্ষিণের রাজ্যগুলোতে বর্ষার পথে এই সাইক্লোন কোনোভাবে বাধা হয়ে দাঁড়াবে কি না, তা নিয়ে এখনও স্পষ্ট ধারণা মেলেনি। ইতোমধ্যেই কেরালার আকাশে ঘন কালো মেঘ দেখা যাচ্ছে। রোববার কেরালায় বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে ভারতের আবহাওয়া বিভাগ।

ইউরোপিয়ান সেন্টার ফর মিডিয়াম রেঞ্জ ওয়েদার ফরকাস্ট এবং গ্লোবাল ফরকাস্ট সিস্টেমের তরফে আরব সাগরে একটি ঘূর্ণিঝড় উৎপন্ন হওয়ার স্পষ্ট ইঙ্গিত মিলেছে। ভারতের আবহাওয়া বিভাগের বিজ্ঞানী ডি. শিবানন্দ পাইও বিষয়টিতে সম্মতি জানিয়েছেন। এর প্রভাব বিধ্বংসী হতে পারে কি না, তা নিয়ে এখনও কোনো পূর্বাভাস দেওয়া হয়নি।

ভারতের আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, দক্ষিণ পূর্ব আরব সাগরের তীরবর্তী রাজ্যগুলোতে এই ঘূর্ণিঝড় তাণ্ডব চালাতে পারে। সঠিক সময়ে ঘূর্ণিঝড়টি তৈরি হলে জুন মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহেই ঘূর্ণিঝড়টি আছড়ে পড়তে পারে আরব সাগরের পাড়ে। তাণ্ডব চালাতে পারে ভারতের মহারাষ্ট্র, অন্ধ্র প্রদেশ এবং কেরালাতে।

বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা আঞ্চলিক কমিটি একেকটি ঝড়ের নামকরণ করে। যেমন ভারত মহাসাগরের ঝড়গুলোর নামকরণ করে এই সংস্থার আটটি দেশ। দেশগুলো হচ্ছে- বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, মায়ানমার, মালদ্বীপ, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড এবং ওমান, যাদের প্যানেলকে বলা হয় (ডাব্লিউএমও বা
ইএসসিএপি)।

এক সময় ঝড়গুলোকে বিভিন্ন নম্বর দিয়ে শনাক্ত করা হতো। কিন্তু সেসব নম্বর সাধারণ মানুষের কাছে দুর্বোধ্য। ফলে সেগুলোর পূর্বাভাস দেয়া, মানুষ বা নৌযানগুলোকে সতর্ক করাও কঠিন মনে হতো। এ কারণে ২০০৪ সাল থেকে বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরের উপকূলবর্তী দেশগুলোয় ঝড়ের নামকরণ শুরু হয়।

সে সময় আটটি দেশ মিলে মোট ৬৪টি নাম প্রস্তাব করে। এর আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্র বা অস্ট্রেলিয়া অঞ্চলে ঝড়ের নামকরণ করা হতো। ভারত মহাসাগরে ঘূর্ণিঝড়কে সাইক্লোন বলা হলেও আটলান্টিক মহাসাগরীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড়কে বলা হয় হারিকেন, প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বলা হয় টাইফুন। বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগর উপকূলের আটটি দেশের প্রস্তাব অনুসারে একটি তালিকা থেকে একটির পর একটি ঝড়ের নামকরণ করা হয়। আঞ্চলিক এই আটটি দেশ একেকবারে আটটি করে ঝড়ের নাম প্রস্তাব করেছে। প্রথম দফায় মোট ৬৪টি নাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার বৈঠকে এক বা একাধিক জ্যেষ্ঠ আবহাওয়া কর্মকর্তা অংশ নিয়ে থাকেন। আগে থেকে তারা আলোচনা করে নেন, কি নাম হবে। পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে সেই তালিকা থেকে ঝড়ের নাম বাছাই করা হয়।

ঝড়ের নাম বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখা হয়, যাতে সেটি ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক বা সামাজিক ভাবে কোনোরকম বিতর্ক বা ক্ষোভ তৈরি না করে। উদাহরণ হিসাবে বলা যেতে পারে , ২০১৩ সালে একটি ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেয়া হয়েছিল ‘মহাসেন’। নামটি প্রস্তাব করেছিল শ্রীলংকা। কিন্তু সেখানকার সাবেক একজন রাজার নাম ছিল ‘মহাসেন’, যিনি ওই দ্বীপে সমৃদ্ধি নিয়ে এসেছিলেন। ফলে এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। এমনকি শ্রীলংকার সংবাদমাধ্যমে সেটিকে নামহীন ঝড় বলে বর্ণনা করা হয়। পরবর্তীতে রেকর্ডপত্রে ঝড়টির নতুন নাম নির্ধারণ করা হয় ‘ভিয়ারু’।

বর্তমান সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয় ও তেজ এর
নামকরণ বাংলাদেশ ও ভারতের। পরবর্তী আরও কয়েকটি ঝড়ের নামকরণ করে রাখা হয়েছে যথাক্রমে হামুন (ইরান), মিধিলি (মালদ্বীপ), মিগজাউম (মিয়ানমার), রিমাল (ওমান)।

সিবিএনটুডে/৭মে/জই/জলবায়ু

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।